সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা ও কবিরাজী চিকিৎসা
সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা ও কবিরাজী চিকিৎসা
বাংলাদেশে কত প্রজাতীর সাপ আছে?
বাংলাদেশে ছোট বড় সবমিলিয়ে ৯০+ প্রজাতির সাপ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে কত প্রজাতির বিষাক্ত সাপ আছে?
যার মধ্যে ৩৩ প্রজাতির বিষাক্ত। এই ৩৩ প্রজাতির মধ্যে আবার ১৬ প্রজাতিই সামুদ্রিক। তার মানে মোটামুটি খুব কম সাপই বিষাক্ত।বাকি সব সাপ বিষহীন।
আরো অবাক করা ব্যাপার বিষধর সাপের সব কাপড়েই আপনার শরীরে বিষ প্রয়োগ করবেনা। কারন বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটা সাপের লালা গ্রন্থি,সাপের আবেগ,এবং পরিবেশের তাপমাত্রার উপর অনেকটাই নির্ভরশীল।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ কোনটি?
সাপে কাটা রোগীর কবিরাজী চিকিৎসা
কবিরাজদের গোপন রহস্যই হল এই জায়গাটাই, তারা জীবনে হয়ত অসংখ্য সাপে কাটা রোগী পেয়েছেন। এর মধ্যে জীবনে হয়ত বিষাক্ত সাপে কাটা রোগী পেয়েছেন ১/২ টা বা কেউ কেউ হয়ত পান নাই একটাও।
এ যেন ঝড়ে বক মরার মত ব্যাপার। এই আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে এসেও এইসব ধান্দাবাজির রমরমা ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারা, শুধু আমাদের গ্রাম এলাকার সহজ সরল সাধারন মানুষ গুলোর কাছে। তাই সবাই মিলেই সচেতন হওয়া উচিত।
এ এক চরম রকমের ধান্দাবাজী,মানুষ এর মনস্তাত্ত্বিক অনুভুতি নিয়ে খেলা। আপনার এলাকায় যেসকল কবিরাজকে দেখতে পান সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা করে, তার পুরোটায় ফেইক,ধান্দাবাজ।
সাপে কাটা রোগীর ডাক্তারী চিকিৎসা.
আপনারা যারা শিক্ষিত মানুষ, সচেতন তারা আগে থেকেই এই গল্প গুলো জানেন। তবুও যারা জানেন না তাদের জন্য বলি।
সাপের বিষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিউরোটক্সিন টাইপের এবং মারাত্মক শক্তিশালি বিষ। যা আপনাকে সহজেই মৃত্যুর কোলে ঢেলে দিবে৷ এবং প্রোপার এন্টিভেনম (সাপে কাটা রোগীদের যে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়) সময়মত রোগীর শরীরে প্রয়োগ করতে না পারলে রোগী মারা যাবে।
সাপে কাটার ভ্যাকসিন এর নাম কি?
সাপেকাটা ভ্যাকসিনের নাম হল এন্টিভেনম (Antivenom).
সব ধরনের সাপের বিষের এন্টিভেনম বা ভ্যাকসিন যদিও এখনো আবিস্কার করা সম্ভব হয়নি। তবুও অনেক গুলো সাপের বিষের এন্টিভেনম বা ভ্যাকসিন আবিস্কার সম্ভব হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ । যেগুলো আমাদের গ্রাম বা পাহাড়ি এলাকায় প্রাপ্ত সাপগুলোর জন্য।
কোথায় পাবেন এন্টিভেনম বা ভ্যাকসিন-?
জেলা সদর হাসপাতাল।
প্রচলিত ভুল ধারনা ও সমাধান।
সাপে কামড়ালে করণীয়।
সাপে কাটা স্থানে শক্ত করে বেধে দেওয়া যাতে বিষ উপরে উঠতে না পারে,, এটা ঠিক নয়৷ এখানে মেডেকেটেড বন্ধন দেওয়ার নিয়ম আছে, সেটা হল গামছা,বা ওড়না দিয়ে হালকা করে বাধতে হবে। একেবারে শক্ত করে নয়। শক্ত করে বাধলে শিরার সাথে ধমনীও ব্লক হয়ে যেতে পারে। তখন পা ফুলে যাওয়ার গল্প উপরে যে বলছিলাম রফিক নামক ভদ্রলোকের,, তার মত অবস্থা হবে৷ এমনকি পা এ পচন ও ধরতে পারে ৬ ঘন্টার বেশি শক্ত করে বাধা অবস্থায় থাকলে৷
আরো পড়ুনঃ
- যৌন উত্তেজক ঔষধ সেবনের অপকারিতা
- নাইট ক্রিম ব্যবহার করলে কি ক্ষতি হয়?
- ব্রেন টিউমারের মাথাব্যথা কেমন হয়?
এবং সাপে কাটা রোগীর কামড়ানো স্থানে, ব্লেড বা কিছু দিয়ে কাটাকাটি করা৷ এটা মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে করে আরো দ্রুত সারা শরীরে বিষ ছড়িয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
তাই যেই স্থানে সাপে কামড়াবে,কোন রকম না নড়াচড়া করে হালকা করে বেধে দ্রুত নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাবেন,এবং বিনামুল্যে চিকিৎসা গ্রহন করতে পারবেন। কোন কবিরাজ বা ওঝার কাছে অবশ্যই যাবেন না। এতে আপনার জীবন বিপন্ন হতে পারে।
তাই আশাকরি সবাই সচেতন হবেন,আজকাল এইসকল কবিরাজ রা আর একটু চালাকি করে পদ্ধতি পরিবর্তন করে অনেক সময় ধর্ম,বা ধর্মীয় গ্রন্থকে ব্যাবহার করে মানুষ এর অনুভুতিতে জায়গা পেতে চায়। এক্ষেত্রেও সাবধান থাকতে হবে৷
পরিশেষে, বিষহীন/বিষধর যে সাপেই কামড়াক, আপনার মানুসিক প্রশান্তির জন্য একবার অন্তত সদর হাসপাতালে এসে চিকিৎসক এর পরামর্শ নিবেন।