যৌন উত্তেজক ঔষধ সেবনের অপকারিতা

 


যৌন উত্তেজক ঔষধ



সকাল ৯.৪০ মিনিট। রমযান সাহেব আসলেন আউটডোরে। তার ভাষ্যমতে তিনি আর আগের মত তার স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেনা। বললেন বাবাজি পাওয়ার কম,এই নিয়ে খুব অশান্তিতে আছি। 

বললাম চাচা বয়স কত, বলল ৪৫। খুব অবাক হলাম, মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই চাচার এই অবস্থা কিভাবে হল। আবার বাচ্চাও আছে ৩ টা। রিকশা চালক চাচাকে গভীর এবং গোপন ভাবে জিজ্ঞেস করলাম কাহীনি কি?

চাচা উত্তর দিল -বাবারে, রিকশা নিয়ে বাড়ি আসার সময়,মজিবর হেকীম এর পুরিয়া নিয়ে বাড়ি আসতাম, রাতে খাইলেই ইঞ্জিন গরম হইয়া যাইতো।সেই থাইকা প্রায়ই এমন পুরিয়া খাইতাম (পুরিয়া এক প্রকার হারবাল ঔষুধ)।

ততক্ষনে আসল ঘটনা বুঝলাম৷ 

তারপর চাচাকে প্রায় ৩ মাস চিকিৎসার পর মোটামুটি সুস্থ হলেন। 

এই গল্পটা আপনাদের সাথে শেয়ার করার বিশেষ কারন হল।  আমি আপনাদের প্রতি দ্বায়বদ্ধ এবং সচেতন করা জরুরি মনে করি। 

১.বাজারে যেসকল যৌন উত্তেজক ঔষুধ,

সর্বরোগের মহাষৌধ বলে যে হাফলিটার সিরাপ,হালুয়া বা পুরিয়া বিক্রি করে তা আপনার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং সারাজীবনের জন্য আপনার যৌনক্ষমতাকে শেষ করে দিবে তিলে তিলে, তাৎক্ষনিক ভাবে হয়ত মনে হবে কাজ হচ্ছে কিন্তু আসলে ভিতরে ভিতরে আপনাকে শেষ করে দিচ্ছে। 

২.ইরেকটাইল ডিসফাংশন (যৌন অক্ষমতা)  

একটা স্বাভাবিক রোগ।অনেকেরই হতে পারে, এটাকে এমন গোপন বা ট্যাবু করার ইতিহাস সৃস্টি করে অসাধু ব্যাবসায়ী রা স্টেরয়েড আর নিম্নমানের মারাত্মক ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশিয়ে মানুষকে ঠকিয়ে যাচ্ছে। অথচ আধুনিক চিকিৎসা ব্যাবস্থায় যৌন রিলেটেড যেকোনো সমস্যা সম্পুর্ন সমাধান করা সম্ভব তবুও শরীরের ক্ষতি না করে। 

৩.(প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন)দ্রুত সময়ে বীর্যপাত,

বীর্য পাতলা এই ধরনের ভয়ংকর বিজ্ঞাপনের মোড়ে তরুন সমাজ কে গ্রাস করে ফেলে রাস্তার মোড়ের পোষ্টার আর হকারদের ভয় দেখানো সাজানো কথায়। অথচ এইটাও অহরহ এই আধুনিক চিকিৎসার সুবিধার জন্য প্রায় বেশিরভাগই নির্মুল করা সম্ভব। অথচ তারা ক্ষতিকর ক্যামিকেল এবং মানুষ এর ব্রেইন ওয়াশ করে লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। 

৪.চিকিৎসা পদ্ধতি 

এই ব্যাপারটাকে সবাই এত গোপনীয় মনে করে। তারপর এইসব ভ্যাজাল ক্ষতিকর মেডিসিন গ্রহন করে যত্রতত্র। তারপর আরো ক্ষতি হয়,একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায়। আবার কাউকে বলতেও পারেনা লজ্জায়,ভয়ে। মানুষ এ কি বলবে, কি হবে এইসব চিন্তা করে। 

পুনশ্চঃ 

খুব সহজ কথা বোঝার জন্য রকেট সাইন্স জানার দরকার নেই, একটু সচেতন হলেই বুঝবেন। ধরুন আপনার হাতের টাচফোন টির স্ক্রিন ভেঙে গেলো।দামী ফোন,স্যামসাং বা আইফোন, যদি আপনাকে বলি পাড়ার মোড়ের লাইট ফ্যান সারে যে দোকানে সেখান থেকে সারিয়ে নিন,,সারিয়ে নিবেন? নাকি ভাববেন ডা.জান্নাতুল নাইম সজীব একজন পাগল? 

আসলে ফোনের জন্যেও আমরা সহজ পথটা বেছে নিতে পারি, অথচ সৃষ্টিকর্তার দেয়ার শরীরটার প্রতি আমরা অবহেলা করি। 

আপনি আমার এই পোষ্টটি পড়ছেন মানে আপনি একজন শিক্ষিত এবং সচেতন নাগরিক। সিধান্ত আপনার। আপনার আমার কাছেই চিকিৎসা নিতে হবে এমন নয়, যেকোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক(MBBS) ডাক্তারকেই দেখাবেন। অন্তত তারা আপনার সব রোগ ভালো করতে না পারলেও ক্ষতি হয় এমন কিছু করবেনা।যেটা ভালো হবার নয়,সেই সম্পর্কেও আপনাকে জানাবে,অন্তত আপনার আবেগ কে পুজি করে সর্বরোগের মহাষৌধ বিক্রি করবেনা।। 

 Dr-Jannatul Nayeem Sojeeb 

MBBS(DHAKA), CMU(DIU), General physician. 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url