বাংলাদেশের প্যারামিলিটারি বাহিনী | Bangladesh paramilitary force
বাংলাদেশের কি সত্তিই ৬৮ লাখ সদস্যের প্যারামিলিটারি ফোর্স রয়েছে যা বিশ্বের অন্য কোনো দেশের কাছে নেই?
চলুন কথা না বাড়ীয়ে আমরা বাংলাদেশ প্যারামিলিটারি বাহিনীর সঠিক সংখ্যা কত সেটা জেনে নিই ।
প্যারামিলিটারি বাহিনী কি ?
সংজ্ঞায় বলতে গেলে- প্যারামিলিটারি হলো নাগরিক নিরাপত্তায় ক্ষিপ্র, দক্ষ আর সংবেদনশীল এক কাঠামো । প্যারামিলিটারি বাহিনীর সদস্যরা সাধারণত সামরিক বাহিনীর আদলে প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের ট্রেনিং সামরিক বাহিনীর চেয়েও বিশেষায়িত হয় । প্যারামিলিটারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণও বিভিন্ন দেশে হয় বিভিন্ন রকম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে প্যারামিলিটারি বাহিনী সাধারণত নিয়ন্ত্রিত হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে, ইউরোপ আর লাতিন আমেরিকার অধিকাংশ দেশে প্যারামিলিটারি বাহিনী থাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ।বাংলাদেশের সকল প্যারামিলিটারি ফোর্সগুলো , স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের অধীনে পরিচালিত হয় । আর যুদ্ধের সময় , স্বসস্ত্র বাহিনী অর্থাৎ সেনা, নৌ, এবং বিমানবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হয় ।
প্যারামিলিটারি বাহিনীর কাজ কি ?
প্যারামিলিটারি বাহিনীর প্রধান কাজ হচ্ছে , দেশের অভ্যন্তরীন শান্তি শৃংখলা এবং গোয়েন্দা অভিযান পরিচালনা করা।কেন এদের প্যারামিলিটারি বলা হয়???
মুলত প্যরামিলিটারি বাহিনী একটী একক বাহিনী নয় , , বরং অনেকগুলো বাহিনী কে একসাথে প্যারামিলিটারি ফোর্স বলা হয় ,।
এদের সাংগঠনিক গঠন, কার্যপদ্ধতি, প্রশিক্ষণ, উপসংস্কৃতি এবং প্রায়ক্ষেত্রে কার্যক্রমসমূহ পেশাদারী সামরিক বাহিনীর মত, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর অংশ নয় ।
বাংলাদেশের কোন বাহিনী গুলো প্যারামিলিটারি বাহিনী?
বাংলাদেশ সেনা , নৌ এবং বিমানবাহিনী কে সবসময় যুদ্ধ্বের জন্য এক্টীভ রাখা হয় , এবং তাদের কে যেই অস্ত্রস্বস্ত্র এবং এক্সেস দেয়া হয় , যেগুলো প্যারামিলিটারি বাহিনী গুলো কে দেয়া হয়না , , তাদের শুধুমাত্র পিস্তল এবং রাইফেল দেয়া হয় , এবং তাদের কাজের পরিধি একটী সীমা
রেখার ভিতরে থাকে,বাংলাদেশের স্বসস্ত্র বাহিনী গুলো অর্থাৎ সেনা , নৌ এবং বিমানবাহিনী বাদে সব প্রশিক্ষিত বাহিনি গুলোই আধা সামরিক বাহিনী , খুব ভালো করে মনে রাখবেন , এদের সকলের কাছেই অস্ত্র থাকেনা , বাংলাদেশের স্বসস্ত্র বাহিনী সহ আনমানিক ৭০ লাখের বেশি প্রশিক্ষিত সদস্য রয়েছে । এর মধ্যে ২৫-৩০ লাখের মতো সদস্য হলো হলো , আর বাকিরা অস্ত্র বাদে , তাদের হাতে থাকে লাঠির মতো দেশিও অস্ত্র ।এর কারন আমরা একটু পরেই বলব, তার মানে একটা একটা বিষয় বুঝলেন , যে প্যারামিলিটারি হলো এমন একটি বাহিনী যারা যুদ্ধ করতে সক্ষম গুলি চালাতে সক্ষম , যুদ্ধ শুরু হলে তাদের শুধুমাত্র কয়েক সপ্তাহ ধরে রনকৌশলের ট্রেনিং দিলেই তারা স্বসস্ত্রবাহিনীকে সাপোর্ট দিতে পারবে । আর এটাই হলো স্বসস্ত্র বাহিনী এবং প্যারামিলিটারি বাহিনীর মধ্যে পার্থক্য ।
প্রিয় বন্ধুরা তাহলে চলুন প্যারামিলিটারি বাহিনীর সঠিক সংখ্যা টা এক নজরে জেনে নিই।
বাংলাদেশের যেসব বাহিনী গুলো , প্যারামিলিটারি বা আধা-সামরিক ।
১) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ।
২) বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ।
৩) বাংলাদেশ আনসার ।
৪) পুলিশ এবং পুলিশের অধীনে পরিচালিত সকল বাহিনী । এবং
৫) বাংলাদেশের সকল স্পেশাল ফোর্সসমুহ ।
১) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড এর সদস্য সংখ্যা ৭০ হাজার ।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের আরো ১৫ হাজার পদ বাড়ানো হবে । এ বিষয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে লেখালেখি হয় , তারমধ্যে বিস্তারিত বর্ননা দিতে গিয়ে the independent নিউজে বলা হয় , ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেই ৫ হাজার নিয়োগ দেয়া হবে বাকিগুলো পরে , আরো বলা হয় , এই ১৫ হাজার পদের মাধ্যমে বিজিবির মোট সদস্যসংখ্যা ৭০ হাজার হবে ।
২) বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ।
বাংলাদেশ কোশটগার্ডের কাজ মুলত উপকুল সীমান্ত রক্ষা করা । এর সদস্যসংখ্যা বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ হাজারের মতো ।
৩) বাংলাদেশ আনসার ।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, আইন প্রয়োগ ও সংরক্ষণের জন্য গঠিত একটি বাহিনী। এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ আনসার বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্ররহত্তম এবং বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম একক কোনো বাহিনী । এর সদস্য সংখ্যা ৬১ লাখ ।
আনসার এর সদস্য সংখ্যা যে ৬১ লাখ এতে কোন সন্দেহ রাখার অবকাশ নেই । কারন বাংলাদেশ আনসার এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ এটা প্রকাশ করা হয়েছে,
এছাড়াও আপনাদের নিশ্চিত হওয়ার সুবিধার্তে একটি লিংক দিয়েছি ড্রিসকিপষানে , দেখে নিতে পারেন ।
৪) পুলিশ এবং পুলিশের অধীনে পরিচালিত সকল বাহিনী ।
বর্তমানে বাংলাদেশে পুলিশ এর সদস্য সংখ্যা ২ লাখ ১২ হাজার । যা আমরা বেশ কিছু নিউজ মাধ্যম থেকে জানতে পারি ।
পুলিশের অধিনে পরিচালিত র্যাপিড একশান ব্যাটেলিয়ানের সদস্য রয়েছে ১২ হাজার , , যেটা আল জাজিরার একটী রিপোর্ট থেকে আমরা জানতে পারি ।
এছাড়াও বাংলাদেশের রয়েছে আরো কিছু স্পেশাল ফোর্স , এবং রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা , যেগুলোর নিরাপত্তার স্বার্থে গোপন তথ্য শেয়ার করা হয়না । কাজেই আরো অনেক না জানা সদস্য বাদ পড়ে যাচ্ছে আমাদের নলেজ থেকে ।
আমরা আপনাদের সামনে প্রমানসহ প্রায় ৬৪ লাখ সদস্য তুলে ধরেছি, বাকি ৪ লাখ আছে কোনোভাবে । যেগুলো আমাদের নলেজের বাইরে । গ্লোফাল ফায়ার পাওয়ার অনেক রিসার্স করেই কোনো তথ্য দেয় , তারা ৬৮ লাখ দিয়েছে , এ ছাড়াও আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট এ দেখবেন ৬৮ লাখ বলা আছে ।
যুদ্ধের সময় এরাই সেনাবাহিনীকে সাপোর্ট দিবে ,
আর এদের কে স্বসস্ত্র বাহিনীর পাওয়ার দেয়া হয়নি , কারন যেকোনো ইস্যুতে সামরিক ক্যান্টনমেন্ট গুলো দখলে নিয়ে দেশ নিয়ন্ত্রন নেয়ার মতো ঝুকি থেকে যায় এদের দ্বারা ।
প্রিয় বন্ধুরা বাংলাদেশ প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংখ্যা নিইয়ে যদি আপনার ধারনা পরিবর্তন হয় , তাহলে কমেন্ট এ জানিয়ে দেবেন , এতে আমাদের পরিশ্রম স্বার্থক হবে।