বাংলাদেশ বনাম মায়ানমার সামরিক শক্তি ২০২২ | Bangladesh vs Myanmar military power comparison 2022


বাংলাদেশ বনাম মায়ানমার সামরিক শক্তি ২০২২ | Bangladesh vs Myanmar military power comparison 2022
Bangladesh vs Myanmar military power comparison 2022

আস-সালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন , 

Bangladesh Trend -এর  আজকের আয়োজনে আমরা বাংলাদেশ বনাম মায়ানমার এর সামরিক শক্তি  (Bangladesh vs Myanmar military power comparison 2022) একাবারে নিরপেক্ষ অবস্থানে তুলনামুলকভাবে আলোচনা করব । দুই দেশের সেনাবাহিনী নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সকল শক্তি আমরা তুলনামুলকভাবে আলোচনা করব।


গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২২ সালের বার্ষিক পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ৪৬ তম অবস্থানে রয়েছে , অপরদিকে মায়ানমার ৩৯ তম , অবস্থানে রয়েছে , 

*** ২০২২ সালে বাংলাদেশের সামরিক বাজেট ৩,৮  বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অপরদিকে মায়ানমারের সামরিক বাজেট ২,২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । বাংলাদেশের সামরিক বাজেট মায়ানমারের তুলনায় বেশি,হলেও , দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনুসারে আরো বেশি হওয়া উচিত ছিল , , 

 ****একটি দেশের শসস্ত্র বাহিনী স্থল, নৌ এবং আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত হয়  । ধাপে ধাপে আমরা বাংলাদেশ এবং মায়া্নমারের প্রতিটা বাহিনীর সামরিক সক্ষমতা তুলে ধরছি ।

বাংলাদেশ VS মায়ানমারের সেনাবাহিনী

২০২২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৪০ টি দেশের তালিকায় ৪৬ নম্বরে রয়েছে অপরদিকে মায়ানমার সেনাবাহিনী ২৬ নম্বর অবস্থানে রয়েছে ,  

বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে একটিভ সৈন্য রয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার , অপরদিকে মায়ানমারের সেনাবাহিনীতে একটিভ সৈন্য রয়েছে ৪ লাখের মতো ।  দুই দেশের কাছেই কোনো রিজার্ভ ফোর্স নেই ,  

****বাংলাদেশের কাছে প্যারামিলিটারি ফোর্স রয়েছে ৬৮ লাখ যা বিশ্বের ১ নম্বর প্যারামিলিটারি ফোর্স।অপরদিকে মায়ানমারের কাছে প্যারামিলিটারি ফোর্স রয়েছে মাত্র ৫০ হাজার , প্যারামিলিটারি ফোর্স কি এবং আমাদের বাংলাদেশের প্যারামিলিটারি ফোর্স সম্পর্কে জানতে চাইলে,  আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ভিজিট করতে পারেন ।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল-  Defence Update World

অনেকি সন্দেহ প্রকাশ করে থাকেন সত্তিই কি বাংলাদেশের ৬৮ লাখ প্যারামিলিটারি সদস্য রয়েছে , আমরা নেক্সটের ব্লগে বাংলাদেশ প্যারামিলিটারি ফোর্স এর সঠিক সংখ্য কত সেটা আপনাদের হিসেব করে বুঝিয়ে দেব , সুতরাং আমাদের সাথেই থাকুন , 

****বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে মেইল ব্যাটোল ট্যাংক রয়েছে  ৩২০ টি।
অপরদিকে মায়ানমারের সেনাবাহিনীতে মেইল ব্যাটোল ট্যাংক রয়েছে ৬৬৪ টি , 

****বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে Armored Vehicle রয়েছে ৮৩৭টি ।
অপরদিকে মায়ানমারের সেনাবাহিনীতে Armored Vehicle দেড় হাজারের মত । 

****বাংলাদেশের কাছে Self Propelled Artillery রয়েছে ২৭ টি।
অপরদিকে মায়ানমারের কাছে Self Propelled Artillery রয়েছে ১৯০ টি ।

****বাংলাদেশের কাছে Towed Artillery রয়েছে মাত্র ৩৭১ টি । 
অপরদিকে মায়ানমারের কাছে Towed Artillery রয়েছে ১৮৬৯ টি । যা বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম Towed Artillery বহর । যুদ্ধে সীমান্ত এলাকায় রাজত্ব করতে টাওয়েড আর্টিলারী যথেষ্ট ভুমিকা রাখে  । 

****বাংলাদেশের কাছে Rocket projectors রয়েছে  ৬৯ টি ।                                                                     
অপরদিকে মায়ানমারের কাছে Rocket projectors রয়েছে ৪৮৬ টি।

****শত্রু পক্ষের ট্যাংক দ্ধংশ করার জন্য নতুন পুরাতন মিলিয়ে বাংলাদেশের কাছে মোট এন্টি ট্যাংক ওয়েপন্স রয়েছে ২০০০ টির বেশি , যা বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট নয় ,   এবং অন্যান্য মর্টার অস্ত্র রয়েছে সাড়ে ৫শ টির মতো , 


অপরদিকে মায়ানামার সেনাবাহিনি ১০ ধরনের এন্টী ট্যাংক মিসাইল ব্যবহার করে , তার মধ্যে তারা শুধুমাত্র ৩ ধরনের মিসাইলের সংখ্যা প্রকাশ করেছে যার সংখা ২৩শটির বেশি , এছাড়াও আরো ৭ ধরনের এন্টী ট্যাংক মিসাইল এর সংখ্যা প্রকাশ করেনি , সেগুলো অজানাসংখ্যক । 


দুক্ষজনক হলেও এটাই সত্য যে, মায়ানমারে ট্যাংক অনুসারে পর্যাপ্ত ATGM বাংলাদেশের নেই , অপরদিকে বাংলাদেশের ট্যাংক অনুসারে পর্যাপ্ত ATGM মায়ানমারে কাছে রয়েছে ।                               আর মায়ানমার তাদের মর্টার অস্ত্রের সংখ্যা প্রকাশ করেনি , তবে আমার ধারনা মায়ানমারে মর্টার অস্ত্র বাংলাদেশের চেয়ে কয়েকগুন বেশি হবে , ,  


এছাড়াও মায়ানমার বাংলাদেশ সংঘাতে যেই অস্ত্র সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখবে সেই অস্ত্র হলো মিসাইল , এবং ভৌগলিক সুবিধা , ,   দুক্ষজনকভাবে মায়ানমার বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি ভৌগলিক সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে , , কিন্ত বাংলাদেশ কম সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার পরেও মিসাইল শক্তিতে তারাই বেশি এগিয়ে , যদি বাংলাদেশ মিসাইল শক্তিতে এগিয়ে থাকতো তাহ্লে দুই দেশের সামরিক শক্তির ব্যালেঞ্চ করা যেত , ,  


যাইহোক বন্ধুরা, ***** এই ছিল বাংলাদেশ বনাম মায়ানমারের সেনাবাহিনী এক নজরে ,  চলুন এবার আমরা বাংলাদেশ বনাম মায়ানমারের নৌবাহিনীর সামরিক শক্তি কতটা তুলনামুলকভাবে জেনে নিই । 


****২০২২ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী র‍্যাংকিং ৩১ নম্বরে রয়েছে অপরদিকে মায়ানমার নেভি ২০ তম অবস্থানে রয়েছে  ।


****বাংলাদেশ নেভিতে মোট একটিভ সদস্য রয়েছে ২৫ হাজার ,  অপরদিকে মায়ানমার নেভিতে এক্টিভ সদস্য রয়েছে ১৬ হাজার  ।  


****২০২২ সালে বাংলাদেশের নৌবাহিনীতে সাবমেরিনসহ  সামরিক কাজে নিয়োজিত মোট নৌযান রয়েছে ১১২ টি। অপরদিকে মায়ানমার নেভিতে রয়েছে মোট ১৫৫ টি । 


****গত বছরের ন্যায় এ বছর ও বাংলাদেশের সাবমেরিন রয়েছে ২ টি , ফ্রিগেট রয়েছে ৭ টি এবং কর্ভেট রয়েছে ৬ টি ।   
অপরদিকে মায়ানমার নেভিতে সাবমেরিন রয়েছে ২ টি , আরো একটি চলতি বছরেই যুক্ত হতে পারে।


****মায়ানমার নৌবাহিনীতে বাংলাদেশের ৭ টি  ফ্রিগেটের পরিবর্তে রয়েছে ৫ টি ,  ৬ টি কর্ভেটের পরিবর্তে রয়েছে ৩ টি কর্ভেট যুদ্ধজাহাজ  । মায়ানমার গেম চেঞ্জার বড় যুদ্ধজাহাজের দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি পিছিয়ে রয়েছে  ।  কিন্ত মিসাইল টর্পেডো এবং এয়ার সাপোর্টের দিক থেকে আবার এগিয়ে রয়েছে মায়ানমার  নৌবাহিনী ।


****এছাড়াও বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে পেট্রোল ভেসেলস রয়েছে ৩০ টি অপরদিকে মায়ানমার নৌবাহিনীতে পেট্রোল ভেসেলস রয়েছে ১৩৩ টি । সংখায় এটি বিশ্বের ৬ষ্ঠ তম পেট্রোল ভেসেলস বহর ।                                                                                                                                                                     
***** Petrol vessels হলো সাধারনত একটু ছোট নৌযান যা উপকুলী প্রতিরক্ষা,সীমান্ত সুরক্ষা,অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজে ব্যাবহৃত হয়  । 


এছাড়াও বাংলাদেশ নেভিতে মাইন ওয়ারফেয়ার বা মাইন সুইপার জাহাজ রয়েছে ৫ টি।
অপরদিকে মায়ানমার নেভিতে মাত্র ২ টি মাইন সুইপার জাহাজ রয়েছে ।     }}                  

এছাড়াও ২ দেশেরি রয়েছে অনেক ছোটো ছোটো টহল ও উধার বোট এবং গানবোট , , , 
আর  ব্লগের শুরুতেই আপনাদের বলেছিলাম যে, মায়ানমারের মিসাইল এবং টর্পেডো সিস্টেম অনেক বেশি এগিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে , ,
বন্ধুরা এই ছিল ২ দেশের নোউবাহিনীর সামরিক শক্তির তুলনা , চলুন এবার আমরা এক নজরে ২ দেশের বিমানবাহিনীর সামরিক শক্তির তুলনা দেখে নিই , ,

২০২২ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ৫১ নম্বরে রয়েছে , অপরদিকে মায়ানমারের বিমানবাহিনী ৩৬ তম অবস্থানে রয়েছে  । 

বর্তমান যুগে যারা আকাশপথে সক্ষমতা অর্জন করবে তারাই বিজয়ী হবে , সেখানে বাংলাদেশ মায়ানমারের চেয়ে দুর্দান্তভাবে পিছিয়ে রয়েছে  ।  

*****বরাবরের মতোই বাংলাদেশ প্রধান যুদ্ধবিমান রয়েছে ৪৪ টি অপরদিকে মায়ানমার বিমানবাহিনীতে প্রধান যুদ্ধবিমান বা ফাইটার জেট রইয়েছে  ৮১ টি ,  

বাংলাদেশের  ৪৪ টির মধ্যে ৩৬ টিই হলো ৩য় প্রজন্মের সেকেলে Chengdu-f7 ,যার বিপরীতে মায়ানমারের ও Chengdu-f7 রয়েছে ২১ টি । বাংলাদেশের বাকি ৮ টি যুদ্ধবিমান হলো ৪র্থ প্রজন্মের মিগ-২৯ । আমাদের ৮ টির বিপরীতে মায়ানমারের  ৩১ টি মিগ-২৯ রয়েছে ।  

বন্ধুরা আমাদের ফাইটার জেট এছাড়া আর নেই , কিন্ত মায়নমারের আরো ৭ টি রয়েছে JF-17 Thunder ফাইটার যেগুলো পাকিস্তানের , আরো ৭ টি অর্ডারে রয়েছে ।

এর বাইরে আরো,  ২১ টি Nanchang Q-5 যুদ্ধবিমান রয়েছে , এবং আরো ১ টি রয়েছে Shenyang J-6 যুদ্ধিমান ।

এছাড়াও মায়ানমার বিমানবাহিনী বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ৬টি Su-30 যুদ্ধবিমান অর্ডার দিয়েছে রাশিয়ার কাছে  । 

এই ছিল ২ দেশের ফাইটার বিমান । 

এর বাইরে আরো কিছু এয়ারক্রাফট রয়েছে যেগুলো যুদ্ধের সহযোগী । যেমন, 

*****মায়ানমারের বিমানবাহিনীতে যুদ্ধাস্ত্রাদী এবং সেনা পরিবহনের জন্য টোটাল Transport Aircraft রয়েছে ২৬ টি। যা বাংলাদেশের রয়েছে ১৩ টি । 

*****মায়ানমারের কাছে সামরিক কাজে নিয়জিত মোট Helicopter রয়েছে ৮০ টি অপরদিকে বাংলাদেশের রয়েছে  ৬৬ টি । 

এরের মদ্ধ্যে মায়ানমারের Attack Helicopter রয়েছে রয়েছে ৯ টি ।  অপরদিকে বাংলাদেশের কোনো এটাক হেলিকপ্টার নেই ,তবে সম্প্রতি রাশিয়ার কাছে ৮ টি এটাক হেলিকপ্টার অর্ডার করা হয়েছে , যা ডেলিভারী পেতে অন্তত কতেক বছর সময় তো লাগবেই ।  

মায়ানমারের কাছে প্রশিক্ষন বিমান রয়েছে ৯৩ টি অপরদিকে বাংলাদেশের কাছে প্রশিক্ষন বিমান রয়েছে ৬৩ টি ।  

এছাড়াও মায়ানমারের কাছে রয়েছে চীনের CASC Rainbow এর মত উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন , এবং আরো কিছু সারভেইলেন্স ড্রন ,   যার বিপরীতে বাংলাদেশের কাছে কোনো সামরিক ড্রন নেই  ।         

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা কোন দেশ নিরাপত্তার জন্য নির্দিষ্টভাবে  তাদের সামরিক শক্তি প্রকাশ করেনা ,আমাদের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য নিতে হয় , তাই একটু কম বেশি হতেই পারে , তবে আমরা সর্বচ্চ পর্যায়ে নির্ভুল তথ্য দেয়ার চেষ্টা করেছি ,  যদি অভিজ্ঞ কোনো ভিউয়ার্স থেকে থাকেন , আপনার মুল্যবান পরামর্শর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ থাকব ।     


Bangladesh Trend প্রিয় পাঠক বন্ধুরা মায়ানমার এবং বাংলাদেশের মধ্যে যুদ্ধ হলে কে জিতবে বলে আপনার মনে হয় ।   এ বিষয়ে আপনার মুল্যবান মতামত টি কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেনা না ।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url